প্রত্যয় ওয়েব ডেস্ক রিপোর্টঃ করোনার (কভিড-১৯) বৈশ্বিক-প্রেক্ষাপটে দেশে ফেরা ক্ষতিগ্রস্ত অভিবাসী কর্মীরা ৪ শতাংশ হারে সরল-সুদে জামানত ছাড়াই সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাচ্ছেন। বাংলাদেশ ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের সহযোগিতায় প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক এই ‘পুনর্বাসন ঋণ’ প্রদান করবে। ঋণ-গ্রহীতারা শতকরা ৪ ভাগ সরল-সুদে ৫ বছরের মধ্যে ঋণের টাকা পরিশোধ করতে পারবেন। ২ লাখ টাকার উপরে সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণও নিতে পারবেন ক্ষতিগ্রস্ত অভিবাসী কর্মীরা। কিন্তু সে-ক্ষেত্রে ঋণ-গ্রহীতার জামানত বা গ্যারান্টারের ব্যবস্থা থাকতে হবে। চলতি বছরের ১ মার্চ থেকে যে সব বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মী ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দেশে ফিরেছেন,কেবলমাত্র তারাই এ ঋণ প্রাপ্তির জন্য বিবেচিত হবেন।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রণীত ‘করোনার (কোভিড-১৯) কারণে ক্ষতিগ্রস্ত অভিবাসী কর্মী পুনর্বাসন ঋণ নীতিমালা-২০২০’ থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রণীত নীতিমালা অনুসারে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দেশে ফিরে আসা অভিবাসী কর্মীদের পাশাপাশি যেসব বাংলাদেশী অভিবাসী কর্মী বিদেশে মৃত্যুবরণ করেছেন,তাদের প্রত্যেকের পরিবার প্রতি ১ (এক) জন উপযুক্ত সদস্য এ ‘পুনর্বাসন ঋণ’ নিতে পারবেন। তবে অন্য কোন সংস্থা/ ব্যাংক/ আর্থিক প্রতিষ্ঠান অথবা বেসরকারী সংস্থা হতে ঋণ খেলাপি ব্যক্তি এ ঋণ পাওয়ার যোগ্য নয় বলেও নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের প্রণীত নীতিমালার আওতায় স্বল্প সুদে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের তহবিল থেকে প্রদত্ত ২শ’ কোটি টাকার প্রাথমিক তহবিলও গঠন করা হয়েছে। এই টাকা বিনা সুদে প্রবাসী কল্যাণ ব্যংককে প্রদান করা হবে।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দেশে ফিরে আসা কর্মীদের ক্ষতি-কাটিয়ে ‘ঘুরে দাঁড়াতে’ সহায়তার লক্ষ্যে ওই টাকা থেকে সল্প-সুদে ‘পুনর্বাসন ঋণ’ প্রদান অচিরেই শুরু করবে। এদিকে ‘পুনর্বাসন ঋণের’ তহবিল-সহায়তার লক্ষ্যে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক ও ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারকও (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে। রোববার প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত ওই সমঝোতা স্মারক অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ প্রধান অতিথি ও মন্ত্রণালয়ের সচিব ড.আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বিশেষ অতিথি ছিলেন।
সমঝোতা স্মারক অনুযায়ি ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক’কে ‘পুনর্বাসন ঋণ’ প্রদানে বিনা-সুদে ২শ’ কোটি টাকা দিবে। অপরদিকে মন্ত্রণালয়ের নীতিমালায় জানানো হয়েছে, ‘পুনর্বাসন ঋণের’ জন্য আবেদনকারীকে তার পাসপোর্টের (পাসপোর্টের বহির্গমণ ও আগমণ সীলযুক্ত পাতাসহ) সত্যায়িত ফটোকপি, জনশক্তি ও কর্মসংস্থান প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) স্মার্ট কার্ড/চাকরিরত দেশের আইডি কার্ডের সত্যায়িত ফটোকপি/ বৈধ পথে বিদেশ গমণের প্রমাণপত্র/বিদেশে চাকুরির চুক্তিপত্র/ বৈধ পথে রেমিটেন্স প্রেরণের প্রমাণপত্র এবং ক্ষতিগ্রস্ত অভিবাসী কর্মী মর্মে সংশ্লিষ্ট জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের প্রত্যয়নপত্র ঋণ-আবেদন পত্রের সাথে প্রমাণিক দলিল হিসেবে দাখিল করতে হবে। নীতিমালার আলোকে কৃষি খাত, মৎস্য সম্পদ বিশেষ করে কার্প জাতীয়-রুই, কাতলা,মৃগেল এবং ক্যাট ফিস-পাংগাস, বোয়াল, পাবদা, টেংরা, মাগুর, শিং তেলাপিয়া, ভেটকি, চিতল, কৈ, থাই কৈ, শোল, গজার, পুঁটি প্রভৃতি জাতের মৎস্য চাষ ও অন্যান্য ক্ষুদ্র ব্যবসার জন্য এই ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার প্রদান করা হবে বলেও নীতিমালায় জানানো হয়েছে।